জামালপুরে লোহার রড দিয়ে পেটানো হলো প্রধান শিক্ষিকাকে!

জামালপুরে লোহার রড দিয়ে পেটানো হলো প্রধান শিক্ষিকাকে!

মতিহার বার্তা ডেস্ক: জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার সাজিমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হামলা চালিয়ে প্রধান শিক্ষিকাকে পিটিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে একই স্কুলের সভাপতি প্রার্থী ও সাবেক এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে।

গুরুতর আহত অবস্থায় ওই শিক্ষিকাকে বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে এই ঘটনা ঘটে।

 একই স্কুলের সহকারী শিক্ষক মো.তারিকুজ্জামান ছোটন জানান, সাজিমারা গ্রামের বাসিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য হামিদুর রহমান ফর্সা বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি পদে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এই নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে প্রধান শিক্ষিকা আফরোজা সুলতানা বীনাকে চাপ প্রয়োগ করে আসছিলো হামিদুর রহমান।

একই কারনে রাফিউল ইসলাম রাফি নামে এক শিশুকে তার নিজের সন্তান পরিচয়ে স্কুলে ভর্তি করেন। কিন্তু হামিদুর রহমান ফর্সার প্রতিপক্ষরা প্রধান শিক্ষক আফরোজা সুলতানা বীনার কাছে অভিয়োগ করেন সাজিমারা সরকারি প্রাইমরী স্কুলের ওই ছাত্র রাফিউল ইসলাম রাফি হামিদুর রহমান ফর্সার সন্তান না। রাফিউল ইসলাম রাফি একই গ্রামের হাবিবুর রহমান বইতুল্লাহর ছেলে।

অভিযোগের বিষয়টি সমাধানের জন্য প্রধান শিক্ষক আফরোজা সুলতানা বীনা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সাত্তারের কাছে একটি প্রত্যয়নপত্র চান। ইউপি চেয়ারম্যান তার প্রত্যয়ন পত্রে উল্লেখ করেন, স্কুল ছাত্র রাফিউল ইসলাম রাফির বাবার নাম হামিদুর রহমান ফর্সা নাম দিয়ে যে জন্ম সনদটি দাখিল করেছে সেই জন্ম সনদটি ভূয়া। প্রকৃতপক্ষে চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর জাল করে স্কুলে একটি ভূয়া জন্মসনদ দাখিল করা হয়েছে। স্কুল ছাত্র রাফির বাবার নাম হাবিবুর রহমান বইতুল্লাহ।

এই ঘটনায় প্রধান শিক্ষক আফরোজা সুলতানা বিনার প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি প্রার্থী সাবেক ইউপি সদস্য হামিদুর রহমান ফর্সা বৃহস্পতিবার সকালে বিদ্যালয়ে হামলা চালায়। একপর্যায়ে হামিদুর রহমান ফর্সা প্রধান শিক্ষক আফরোজা সুলতানা বীনাকে স্কুলের একটি কক্ষে নিয়ে দরজা বন্ধ করে বেদম প্রহার করে। লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে প্রধান শিক্ষককে গুরত্বর আহত করে হামিদুর রহমান ফর্সা।

পরে অন্যান্য শিক্ষক ও গ্রামবাসীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে গুরুত্বর আহত প্রধান শিক্ষক আফরোজা সুলতানা বীনা বকশীগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষিকা আফরোজা সুলতানা বীনা জানান, হঠাৎ করেই হামিদুর রহমান অফিস কক্ষে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয় এবং আমার উপর অতর্কিত হামলা চালায়।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অরুণা রায় জানান, বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পেলেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিলক্ষিয়া ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সাত্তার বলেন, আমার স্বাক্ষর জাল করে ভূয়া জন্ম সনদটি বানিয়েছিলো হামিদুর রহমান ফর্সা। এছাড়া বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে প্রবেশ করে একজন শিক্ষিকাকে মারধর করে সে অনেক বড় অন্যায় করেছে। এই অপরাধে তার দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি হওয়া উচিত।

মতিহার বার্তা ডট কম ২৯  আগস্ট ২০১৯

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply